Table of Contents

সৌন্দর্যের জন্য প্রকৃতি

সৌন্দর্যের জন্য প্রকৃতি
Table of Contents

সৌন্দর্য

শরীরের বাহ্যিক রূপের ধরনকেই আমরা সৌন্দর্য্য হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকি।  হতে পারে তা কালো বা সাদা বর্ণের মানুষ। তাতে কি গায়ের রঙ দিয়ে কখনোই রুপ বিচার হয় না। সেই প্রাচীন কাল থেকেই সৌন্দর্য্যের কদর সব সময়। আর সেই সৌন্দর্য্যের প্রতীক হিসেবে ভাবা নারীর রূপ। সেই নারীর রূপ চর্চায় যেন সৌন্দর্যের জন্য প্রকৃতি সকল কিছু  দিয়েছে। 

প্রকৃতি

সৃষ্টির অপূর্ব সব দানে ভরপুর আমাদের প্রকৃতি। শত রঙের ছোয়ায় যেন শিল্পীর তুলিতে আকাঁ যেন জীবন্ত ছবি। সৃষ্টিকর্তা সব নিজ হাতে সাজিয়ে রেখেছেন। খাবারের পাশাপাশি রূপচর্চার খোরাক যোগায় এই প্রকৃতি। সেই প্রাচীন কাল থেকেই  প্রাকৃতিক রূপচর্চা আজও করে চলেছে আধুনিক রমনীরা।

কেন আজও সৌন্দর্যের জন্য প্রকৃতি

প্রবাহমান সময়ের সাথে সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে রূপ চর্চার ভাষাতেও। সাথে বেড়েছে রূপচর্চার জনিত যত প্রকার সমস্যা । যার মধ্যে স্কিন ক্যান্সার  সবচেয়ে ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। আমেরিকার সবচেয়ে সাধারণ একটি ত্বকের সমস্যা হচ্ছে স্কিন ক্যান্সার। যার মূল কারণ হচ্ছে ম্যালানোমা ( melanoma) ।

গত বছর দেশেটির প্রায় ৮৭,২৯০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিনিয়ত সংখ্যাটা বাড়ছে। আর চুলের ক্ষেত্রে ৮০ লক্ষ মানুষ নানা রকম সমস্যায় জড়িত দেশটিতে। আমেরিকার মত দেশে  আধুনিক প্রসাধনী ব্যবহার করা মানুষ যদি এতো ত্বকের সমস্যায় ভুগছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিএ কী হতে পারে কখনও ভেবে দেখেছেন? তার উপরও তো ভেজাল প্রসাধনীর বিষ ফোড়া আছে।

প্রকৃতির আর্শীবাদে আজও আমরা রূপচর্চার জন্য প্রকৃতির উপরই ভরসা রাখতে পারি।

তবে চলুন দেখে নেয়া যাক রূপ চর্চার জন্য প্রকৃতির কিছু অপার দান।

 

সৌন্দর্যের জন্য প্রকৃতি

সৌন্দর্যের জন্য প্রকৃতি

 

হলুদ

রূপচর্চায় হলুদ

প্রাকৃতিক রূপচর্চার উপাদান গুলোর মধ্যে হলুদের নাম সবার আগে আসে। কারণ হলুদ ত্বকের যত্নে পরম উপকারি। এতে থাকা এন্টিসেপ্টিক এবং এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান  ব্রনের মতো ভয়ানক সমস্যা থেকে দূরে রাখে সাথে। তাছাড়া ব্রণের দাগ তুলতে সাহায্য করে। লোমকূপের তেল হলুদ ভালো কাজ করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে হলুূদের ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকে।এজন্য হলুদকে দক্ষিণ এশিয়ার “ ইন্ডিয়ান জাফরান বলা হয়। তাছাড়া ত্বকের বলিরেখা ও মৃতকোষ দূর করতে হলুদের জুড়ি নেই। চর্মরোগেও এর ব্যবহার দেখা যায় কাচাঁ দুধের সাথে। ত্বকের যেকোন সমস্যায় হলুদের গুণ অনস্বীকার্য। তবে হলুদ কখনোই খালি ব্যবহার করা যাবে না বরং অপ্রক্রিয়াজাত মধু (unprocessed honey)/ দুধ/ নিমের গুড়া সংমিশ্রণ সহিত ব্যবহার করতে হবে।         

দুধের সর

ত্বকের সৌন্দর্যে দুধের সর

প্রাচীনকাল থেকেই বহুল ব্যবহত রূপচর্চার পদ্ধতিতে দুধের সরের ব্যবহার ব্যাপক ভাবে লক্ষ্য করা যায়। যেমনঃ রানী ক্লিওপেট্রা রূপচর্চা দুধের সর অধিক হারে ব্যবহার করতেন।

দুধের সরে রয়েছে অধিক পুষ্টি গুন। যথাঃ প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, এবং কিছুটা মিনারেল। যা স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য বেশ উপকারি। দুধের সর নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয় কোমল উজ্জ্বল। কারণ এতে থাকা ময়শ্চারাইজার ত্বকের ভিতরের প্রবেশ করে টিস্যু গুলোর যত্ন নেয়। ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করতে এর জুড়ি নেই। ত্বকের লোমকূপগুলো গভীরভাবে ভাবে পরিস্কার করে দুধের সর। এই লোমকূপগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে কিন্তু তখন আমরা ব্রণের সমস্যায় পড়ি। আপনার ত্বকের প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন রকম উপাদানের সাথে দুধের সর ব্যবহার করতে পারেন।  

পাকা্ঁ পেপে

রূপচর্চায় ও স্বাস্থ্যরক্ষায় পেঁপে

রূপচর্চায় ফলের ব্যবহার বহুকাল ধরেই। বিভিন্ন রকম  পাকাঁ ফল দ্বারা বিভিন্নভাবে রুপচর্চা করা হয়। যেমন পাকাঁ পেপে। শরীরের জন্য পাকাঁ পেপে ভিটামিন – সি এর উৎকৃষ্ট ভান্ডার। ঠিক তেমনি ত্বক ও চুলের জন্য।            

শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশ উপকারি পাকাঁ পেপে। এতে থাকা এনজাইম শুষ্ক ত্বকের প্রাণ ফিরে পেতে সাহায্য করে। ত্বকের প্রিগমেনটেশন  পরিষ্কার করে পাকা পেপে। এতে থাকা লাইটিং প্রপার্টিজ ও বিটা ক্যারটিন ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করে। ত্বকের বলিরেখা দূর করে পাকাঁ পেপে।  তাছাড়া ত্বকের যে কোন প্রকার সমস্যায় পাকাঁ পেপে এন্টিবায়োটিকের মতো কাজ করে। বর্তমান প্রসাধনীতে পাকা পেপের নির্যাস ব্যবহার করতে দেখা যায়।

সরিষার তেল

ত্বক ও চুলের সৌন্দর্যে সরিষার তেল

ত্বকের জন্য সরিষার তেলের উপকারিতা কম বা বেশি আমরা সবাই জানি। প্রাচীনকালে বডি ওয়েল হিসেবে সরিষার তেল ব্যাপক ভাবে ব্যবহার হতো। রান্নায় তো রয়েছে। আজও কিছু পদ যেন সরিষার তেলের রান্না না হলেই চলে না।

চলুন জেনে নেয়া যাক রূপচর্চায় সরিষা তেলের প্রসিদ্ধের কারণ। সরিষার তেলে রয়েছে ভিটামিন -ই যা আমাদের ত্বকের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। একটু খেয়াল করলেই দেখবেন বর্তমান বডি অয়েল গুলোতে ভিটামিন- ই এড করা হয়। কারণ এই উপাদানটি আমাদের ত্বককে স্বাস্থ্যবান করে তুলে। তাছাড়া সরিষার তেল আমাদের ত্বককে রেডিক্যাল ডেমজ, বিভিন্ন রকম দূষণ ও সূর্য্যের আল্ট্রা ভায়লেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া ত্বকের ফাইন লাইন ও বলিরেখা দূর করে সরিষার তেল।

চুলের জন্যও বেশ উপকারী সরিষার তেল। নিয়মিত সরিষার তেল চুলে ব্যবহারে মাথার ত্বকের ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া এই তেলে আরও রয়েছে ওমেগা ফ্যাটি-৩ এসিড যা চুলকে নারিশ করে এবং  চুল দ্রূত বৃদ্ধি পায় ও কালো হয়।

তিলের তেল

স্বাস্থ্যরক্ষা ও সৌন্দর্যচর্চায় তিলের তেল

তিলের তেল আদিম প্রাকৃতিক উপাদান। যা চুল ও ত্বকের যত্নে সমান হারে এখনও ব্যবহৃত হচ্ছে। হলুদ বর্ণের এই তেল অতি পুষ্টিসমৃদ্ধ। যথাঃ তিলের তেলে থাকা এন্টিব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টিজ ত্বকের ব্রন ও রাশ এর মতো সমস্যায় কার্যকরি ভূমিকা পালন করে। এতে থাকা লিনোলিএক এসিড ত্বকে ময়শ্চার করে।

তাছাড়া এতে আরও রয়েছে ভিটামিন – ই, ডি ও বি কমপ্লেস। বর্তমান সময়ের প্রসাধনী সামগ্রীতে এই তেলের ব্যবহার দেখা যায়। ত্বকের যেকোন প্রকার সংক্রমণ ও সমস্যা থেকে দূরে থাকতে তিলের তেলের ব্যবহার অনস্বীকার্য।

চুলের যত্নে এই তেলের গুরুত্ব অনেক। কারন এই তেলে আছে ৮৫% ফ্যাটি এসিড যা চুলের যত্নে অতুলনীয়। এতে আরও আছে ওলিক এসিড ও ভিটামিন – ই ও কে। এ সকল উপাদান চুলের জন্য দরকারি।     

তিসির তেল

স্বাস্থ্যরক্ষা ও সৌন্দর্যচর্চায় তিসির তেল

তিসির  তেল প্রাচীন রূপচর্চার অন্যতম আরেকটি উপাদান। ত্বকের যে কোন প্রকার সমস্যায় তিসির তেল অত্যন্ত উপকারি ও কার্যকর । কারণ এতে থাকা উচ্চ মাএার ওমেগা -৩  এসেনশিয়াল ফ্যাটি এসিড ত্বকের যে কোন প্রকার প্রদাহে কর্যকরি। যেমনঃ ব্রণ, একজিমা, দীর্ঘদিন পুরাতন যে কোন ত্বকের রোগ সাড়াতে তিসির তেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া ত্বকের বলিরেখা সহ ছোপ ছোপ দাগ দূর করে। ত্বকের তারুন্য ধরে রাখতে এই তেলের জুড়ি নেই। সুতরাং বলা যায়, ত্বকের  যেকোন প্রকার সমস্যায় তিসির তেল অসাধারন।

চুলের যত্নেও অসামান্য ভূমিকা রাখে এই তেল। ২০১৪ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি  এবং লম্বা হতে তিসির তেল খুবই ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। এতে আছে প্রোটিন, ভিটামিন – ই এবং উচ্চ মাএার ওমেগা ফ্যাটি এসিড চুলের সকল সমস্যা দূর করতে সহয়তা করে।

নারিকেল তেল

চুলের যত্নে নারিকেল তেল

চুলের পরিপূরক পুষ্টিকর খাবার হিসেবে নারিকেল তেল বহুল জনপ্রিয়। প্রাকৃতিক চুলের কন্ডিশনার নারিকেল তেলকে বলা হয়। সেই প্রাচীন কাল থেকেই এখনও নারিকেল তেলই সেরা চুলের যত্নে। আধুনিক কালে অনেক উপাদান মিশানো হচ্ছে নারিকেল তেলের সাথে। এই ক্যামিক্যাল যুক্ত তেলে চুলের ক্ষতিই বেড়েছে।

প্রাকৃতিক নারিকেল তেলে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টিভাইরাল, এন্টিফাঙ্গাল ও এন্টিবেকটিরিয়াল প্রপাটিজ। যা মাথার ত্বকে সুস্থ রেখে চুলকে প্রদান করে সম্পূর্ণ পুষ্টি। এতে থাকা লিউরিক এসিড রুক্ষ চুলের পুষ্টি যোগায়। সকল বয়সের মানুষের জন্য চুলে নিরাপদ ব্যবহার যোগ্য নারিকেল তেল।

প্রাকৃতিক এই উপাদানগুলোর ব্যবহার কখন শেষ হবে না আমরা যতটায় আধুনিক হয় না কেন।তবে অবশ্যই তা ব্যবহার করতে হবে প্রাকৃতিক পুষ্টিগুন সহ। তবেই আমরা এর সুফল পাবো। ভেজাল পন্যের মাঝে কখনই প্রাকৃতিক পন্যের গুনাগুন পাওয়া যায় না। অবশ্যই আমাদের এই বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে কি খাচ্ছি এবং কি ব্যবহার করছি। সৌন্দর্যের জন্য প্রকৃতি থেকেই আমরা সব উপাদান পেতে পারি।

সৌন্দর্যের জন্য প্রকৃতি
Founder & CEO at  |  + posts

Mr. Shariful Alam Pavel believes in natural living. To live a healthy conscious living, we need to eat green, live green. MyOrganic Bd is a green wellbeing brand, educating millions to live a better life with mother nature.

Cart
  • No products in the cart.